রাতুল প্রতিদিন বিকেলে বারান্দার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে থাকে, চোখ চলে যায় রাস্তার মোড়ে। ডাকপিয়ন কখন আসে, কখন একটা চিঠি তার হাতে তুলে দেয়—সেই অপেক্ষা।
কিন্তু কিসের জন্য এই চিঠির অপেক্ষা?
সবাই জানে, রাতুলের খুব প্রিয় বন্ধু ছিল নীলা। স্কুলজীবন থেকেই তাদের বন্ধুত্ব, তারপর ধীরে ধীরে যেন আরও গভীর হলো। কিন্তু একদিন নীলা হুট করেই শহর ছেড়ে চলে গেল। যাওয়ার সময় সে শুধু বলেছিল, "আমি চিঠি লিখব!"
সেই থেকে রাতুলের প্রতিদিনের রুটিন হয়ে গেছে ডাকপিয়নের অপেক্ষা করা। কিন্তু সময় কেটে যাচ্ছে, দিন-মাস-বছর পেরিয়ে গেল, চিঠি এলো না।
একদিন বিকেলে হঠাৎ করেই বৃষ্টি এলো, ঠিক যেমনটা নীলার চলে যাওয়ার দিন হয়েছিল। ভিজতে ভিজতে রাতুল বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল, ঠিক তখনই ডাকপিয়ন এল।
রাতুল ছুটে গেল নিচে, হাত বাড়িয়ে দিল। ডাকপিয়ন তার দিকে একটা চিঠি বাড়িয়ে দিল।
চিঠির খামে প্রেরকের নাম লেখা নেই, শুধু লেখা—"তোমার বন্ধু"
হাত কাঁপছিল রাতুলের, চিঠিটা খুলে পড়তে শুরু করল—
"চোখ বন্ধ করো, আমি পাশে আছি!"
রাতুল হতভম্ব! চারপাশে তাকিয়ে দেখল, কিন্তু কেউ নেই। বাতাস হালকা করে বইল, এক চিলতে গন্ধ ভেসে এলো—নীলার পছন্দের ল্যাভেন্ডারের গন্ধ।
তারপর?
রাতুল হাসল। মনে হলো, অপেক্ষা শেষ হলো। অথবা, হয়তো অপেক্ষার শুরু!
রাতুলের বুকের ভেতর ধকধক করছে। চিঠির লেখাগুলো বারবার পড়ে দেখছে, কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছে না।
0 মন্তব্যসমূহ