রাত তখন প্রায় দুটো। নিস্তব্ধ জঙ্গলের মধ্যে একটা টর্চের আলো কখনো জ্বলছে, কখনো নিভে যাচ্ছে। জয়ন্ত, অর্ক আর মেঘা নিঃশব্দে হাঁটছে এক পুরনো, ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরের দিকে। তাদের হাতের মানচিত্র বলছে—এখানেই লুকিয়ে আছে শতাব্দী পুরোনো গুপ্তধন।
“সাবধানে! জায়গাটা ভয়ানক… শুনেছি, কেউ এখানে আসলে আর ফিরে যায় না,” ফিসফিস করে বলল মেঘা।
ভুত-টুত কিছু নেই! সব বাজে কথা,” বলল অর্ক, যদিও তার কণ্ঠে ভয় টের পাওয়া যাচ্ছিল।
জয়ন্ত মানচিত্রের দিকটা ভালো করে দেখে বলল, “আমাদের ঠিক মন্দিরের মূল চত্বরে যেতে হবে, সেখানেই একটা গুপ্ত দরজা আছে।”
তারা তিনজন এগিয়ে গেল। চারপাশে শুধু পেঁচার ডাক আর ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ। মন্দিরের দরজা ভেঙে পড়েছিল, ভিতরে ঢুকতেই কেমন একটা শীতল বাতাস এসে গায়ে লাগল। হঠাৎ মেঘা চিৎকার করে উঠল!
“ওই দেখো! ওইটা কী?”
দেওয়ালের গায়ে কালচে রঙের একটা ছায়া কাঁপছে! মুহূর্তের মধ্যে ঠান্ডা বাতাস বইতে লাগল, যেন কেউ ফিসফিস করে বলছে— "পিছিয়ে যাও… গুপ্তধন শুধু অভিশাপ বয়ে আনে!"
অর্ক পাথরের মতো স্থির হয়ে গেল। জয়ন্ত দ্রুত টর্চটা ছুড়ে মারল দেওয়ালে, কিন্তু তখন আর কিছু দেখা গেল না।
“এগুলো আমাদের ভয় দেখানোর জন্যই… চল!” জয়ন্ত বলল দৃঢ় কণ্ঠে।
তারা এগিয়ে গেল। মন্দিরের মাঝখানে একটা পাথরের বেদি ছিল। জয়ন্ত মানচিত্রের নির্দেশ মতো বেদির পাশে থাকা একটা প্রাচীন লক খুঁজে পেল। সে পাথরের খোপে হাত ঢুকিয়ে একটা গোপন সুইচ টিপল।
“গড় গড় গড়…”
ভূগর্ভের নিচে একটা দরজা খুলে গেল!
তিনজন নেমে পড়ল নিচে। এক গোপন কুঠুরিতে তারা দেখতে পেল—একটা বিশাল লোহার বাক্স! গুপ্তধন!
জয়ন্ত হাত বাড়িয়ে বাক্সের ঢাকনাটা তুলল… আর তখনই একটা বিকট আওয়াজ!
সঙ্গে সঙ্গে পুরো মন্দির কেঁপে উঠল, দেয়াল ভেঙে পড়তে লাগল! বাক্সের মধ্যে শুধু ধুলোর মধ্যে একটা হাড়গোড় ভর্তি খুলি আর একটা নোট…
"লোভ তোমায় শেষ করে দেবে। বেরোবার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন তুমি আমার মতোই চিরকাল এখানে বন্দি থাকবে!"
তারা তিনজন আতঙ্কে একে অপরের দিকে তাকাল। দরজাটা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে!
তাহলে কি তারা সত্যিই বন্দি হয়ে গেল? নাকি এই অভিশপ্ত গুপ্তধনের রহস্যের আসল সত্যিটা অন্য কিছু?
(চলবে…! 😈🔥)
0 মন্তব্যসমূহ